অলাভজনক, সেবামূলক, সহায়তাকারী সংস্থা হিসেবে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে বেশির ভাগ এনজিও লাভ-লোকসান, সুদ-চক্রবৃদ্ধি সুদের ব্যবসাতেই অধিক আগ্রহী হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে লোক দেখানো কিছু সভা, সেমিনার, ওরিয়েন্টেশন, মানববন্ধন করে আসছে। আর হিসেবের খাতায় যোগ হচ্ছে লাখ লাখ, কোটি কোটি টাকা।
এনজিও কর্মকাণ্ডের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে ভাঁওতাবাজ, প্রতারক চক্রও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে জেলাজুড়ে। তারা জেলা, উপজেলা, পৌরসভা, ইউনিয়ন, এমনকি মাঠ পর্যায়েও শাখা কার্যালয়, ইউনিট কার্যালয় সাজিয়ে গুছিয়ে বসছে বিত্ত বৈভবের মালিক হচ্ছে। নানা বুলি আউডিয়ে লোভনীয় সব কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে সংস্থাগুলো সদস্য সংগ্রহের অভিযানে নামে। কখনো চাকরি দেওয়ার নামে জামানত হিসেবে, কখনো সঞ্চয় বা আমানত সংগ্রহের নামে জমা নেওয়া হয় হাজার হাজার, লাখ লাখ টাকা। এক পর্যায়ে হাজার হাজার মানুষের সর্বস্ব হাতিয়ে নিয়ে প্রতারক এনজিওগুলো লাপাত্তা হয়ে যায়। এমনও ঘটনা ঘটেছে। যা বিভিন্ন জাতীর দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
এনজিও আইন সংশোধন, জেলা পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা চালুসহ সরকারি বিধিনিষেধের নানা কড়াকড়ি করেও এসব দুষ্ট এনজিওকে নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়ন ও ২টি (লালমনিরহাট, পাটগ্রাম) পৌরসভার পাড়া, মহল্লা, গ্রাম ঘিরে সমাজকল্যাণের মহান ব্রত নিয়ে কিছু এনজিও সরকারি বিধিনিষেধের তোয়াক্কা করছে না। এ জেলার কিছুসংখ্যক মতলববাজ কিছু সংখ্যক ব্যক্তি যাচ্ছেতাই করে বেড়াচ্ছে সংঘবদ্ধভাবে। সরকারি পর্যবেক্ষণহীন বিভিন্ন প্রকল্প প্রণয়ন ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সহায়তার নামে কোটি কোটি টাকা বিদেশি অনুদান এনেও তারা দেদারছে লুটপাট চালাচ্ছে। অথচ এসব লুটেরা এনজিওর কার্যক্রম খতিয়ে দেখার ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বরাবরই রহস্যজনক নীরবতা পালন করেন। এ সুযোগে সাহায্যের নামে এসব টাকা এনজিও কর্তাব্যক্তিরা হাতিয়ে নিচ্ছে দেদারছে। যেন দেখার কেউ নেই। আর কমিশন পেলে তারা প্রত্যয়ন পত্রে সাক্ষর করেন মর্মে জানা গেছে।
সুতারাং এ ক্ষেত্রেও জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক।